শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ব্রাহ্মণ

---চক্কোত্তি, চক্কোত্তিদা-----
আমার কণ্ঠ শুনে চক্কোত্তি স্ট্যাচু আমার কণ্ঠস্বরকে একটু বেশিই ভয় পায় কাছে এগিয়ে গেলামজিজ্ঞ্যেস করলাম --- কোথায় যাচ্ছ সক্কাল সক্কাল ?
 --- যজমানের বাড়ি বিয়ের কাজ আছে দিনক্ষণ দেখতে হবে
--- তোমার ভয় করে না ? এই তো নয় যে তোমার যজমানি না-করলে পেটে জুটবে না প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করে যে বেতন পাও তাতে হয় না ?
--- কী-কী-কী-কীসের ভয় !
--- এই যে তুমি ব্রাহ্মণ নও তুমি ব্রাহ্মণ নও সেটা আমার চেয়ে কে বেশি জানে বলো বাংলাদেশের রাহা এপারে এসে চক্কোত্তির ভেক নিয়ে পুরোহিতগিরিতে নেমে পড়লে !
--- কে বললে আমি ব্রাহ্মণ নই ? এই দ্যাখো আমার পইতা ---
--- পইতা দেখাচ্ছ চক্কোত্তিদা ! উপনিষদ্যতে প্রাপ্যতে ব্রহ্মবিদ্যা অনয়া ইতি --- কী বললাম বলোতো ?
--- সংস্কৃত আমি জানি না ভাই
--- সেকি, ব্রাহ্মণমানুষ. অথচ সংস্কৃত জানো না ? অথচ জানো না উপনিষদ শব্দের অর্থ ব্রহ্মজ্ঞান বা ব্রহ্মবিদ্যা ? তোমার তো ব্রহ্মজ্ঞানই হয়নি ব্রাহ্মণ বলে দাবি করছ কীভাবে ?
--- শুধু আমাকে জেরা করে তোমার সমাজের কী লাভ হবে আমি তো একা নই তোমাদের দেশের কোন্ ব্রাহ্মণের ব্রহ্মজ্ঞান হয়েছে ?
মানুষের জন্য যা কিছু ক্ষতিকর, সেগুলির আদিতেই আছে বিশ্বাস বিশ্বাস সত্যের বিরোধী এইভাবে প্রতারণা আর কতদিন চলবে চক্কোত্তিদা ? বিশ্বাসের কাজ অসত্যকে অস্তিত্বশীল করা তুমি তো বাংলাদেশে ছিলে হুমায়ুন আজাদতে চিনতে ? তিনি বলেছেন --- বিশ্বাস থেকে কখনও জ্ঞানের বিকাশ ঘটে না; জ্ঞানের বিকাশ ঘটে অবিশ্বাস থেকে, প্রথাগত সিদ্ধান্ত দ্বিধাহীনভাবে না মেনে তা পরীক্ষা করার উৎসাহ থেকে
--- আজাদ সত্য, আমি মিথ্যা চক্কোত্তিদা মাথা নীচু করে আউড়ে গেলেন
চক্কোত্তিদা আর কোনোদিন যজমানি করেনি

কোন মন্তব্য নেই: