বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

মৃত্যুদণ্ড : শাসনের ছলনায় রাষ্ট্র কর্তৃক নরমেধ যজ্ঞ (দ্বিতীয়/শেষ পর্ব)



পশ্চিমবঙ্গকে সরিয়ে রেখে ভারতের অন্য রাজ্যগুলির দিকে একটু তাকালে একই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি দেখতে পারবেন ভারতের বাইরে অন্যান্য তথাকথিত সভ্য দেশগুলিতেও  নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয় সেগুলি কিছু উল্লেখ করতে মন চাইছে বীভৎসতার বিচারে কিছু বাছাই ঘটনা

ঘটনা : আতঙ্কিত করা, যথেচ্ছ প্রহার, যন্ত্রণা দেওয়া, ভয় দেখানো এবং শেষ পর্যায়ে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারায় গেস্টাপো (গেহেইম স্ট্যাটসপোলজে) ছিল সিদ্ধহস্ত গেস্টাপো, জার্মানের একটি সিক্রেট পুলিশ সংস্থা গেস্টাপো ছিল মানুষের তৈরি জঘন্য, নৃশংস, হিংস্র এক সংস্থা জার্মানিতে একটা সময় এসেছিল যখন গেস্টাপোর নাম শুনলে সাধারণ মানুষ আতঙ্কে শিউরে উঠতবন্ধ হয়ে যেত হৃদস্পন্দন নিরপরাধ মানুষদের উপর অকথ্য অত্যাচার করত এই সংস্থাফ্রিডম অফ মুভমেন্টফ্রিডম অফ স্পিচযদি কোনো জার্মান নাগরিক, তবে তাদের যৌনাঙ্গে ইলেকট্রোডের শক, মহিলাদের ধর্ষণ, গোড়ালিতে দড়ি বেঁধে ছাদ থেকে ঝুলিয়ে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়ার জন্য গাঁইতির হাতল বা রবারের ডাণ্ডা বা বিষাক্ত ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হত অত্যাচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হত
ঘটনা : রাশিয়ার পুলিশ সংস্থা কেজিবি সোভিয়েট যুক্তরাষ্ট্রের অসামরিক গোয়েন্দা পুলিশ বাহিনীকমিটেট গাসুদোর্স্তভেন্নই বেজোপোসনোস্তি’, সংক্ষেপে কেজিবি নাম শুনলেই প্যান্টে হিস্যু হয়ে যাবে অসাড়ে সরকার চালাত কমিউনিস্ট পার্টি, আর সেই সরকারের নির্দেশে কেজিবি সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার করত ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, রাশিয়ার সিক্রেট পুলিশ বাহিনী কাজ করছে ১৯১৭ সাল থেকেজারের আমলে রাজ্যপাট চালাতে অন্যান্য সরকারি দপ্তরের চেয়ে সিক্রেট পুলিশকে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হয়েছিল এটা গড়ে ওঠার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই পুলিশ বাহিনী কত লক্ষ রুশ নাগরিককে যে হত্যা করেছে তার হিসাব নেই
ঘটনা : ইরাকের সিক্রেট সিকিউরিটি পুলিশ প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের সামরিক সরকারের সঙ্গে কুর্দদের সংঘর্ষ লেগেই থাকত শিশু, মহিলা, পুরুষ নির্বিশেষে সুযোগ পেলেই নিরপরাধ কুর্দদের ঠান্ডা মাথায় খুন করত ইরাকের সিক্রেট পুলিশ সাদ্দামের সামরিক সরকার প্রায় ৩০০০ সাধারণ নিরীহ কুর্দদের হত্যা করেছিল বলে জানা যায়
ঘটনা : জি পি ইউ, অর্থাৎইউনাইটেট স্টেট পলিটিক্যাল অর্গানাইজেশন এই পুলিশ সংস্থাটি রাশিয়ার আর-একটি ঘাতকের দলসামরিক বাহিনীতে কারা প্রশাসন পার্টির সমালোচক, অন্য অর্থে বিপ্লবের প্রতিবন্ধক বা দেশের শত্রু, তাদের খুঁজে বের করার কাজে ওজিপিইউ প্রথমদিকে ব্যস্ত থাকলেও পরে রাশিয়ার বৃহত্তম গণহত্যার জন্য এই সংস্থাকে ব্যবহার করা হয়েছিল তিরিশের দশকে যখন সোভিয়েত যুক্তরাষ্ট্রেরকালেকটিভাইজেশন প্রোগ্রামরূপান্তরিত হয় তখন দেশের কৃষকরা এর বিরুদ্ধে সোচ্চারে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ওই প্রতিবাদী কৃষকদের কণ্ঠস্বরকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিয়েছিল এই ওজিপিইউ রাশিয়ার ইতিহাস অনুযায়ী বিশ্বযুদ্ধের সময় দুই কোটি রুশ নাগরিক জার্মানদের হাতে নিহত হয়েছিল কিন্তু তার আগে তিরিশের দশকে যে প্রায় সমসংখ্যক রুশি কৃষককে সে দেশের সরকার গুলি করে, ফাঁসি দিয়ে, বেয়নেটে বিদ্ধ করে লেবার ক্যাম্পে পাঠিয়ে হত্যা করেছিলএই গণহত্যার নায়ক পরবর্তীকালে তার কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা করেননি, বরং আমজনতার সামনে তা গর্ব করে বলতেন প্রথমদিকে অবশ্য ব্যাপারটা চেপে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানরা যখন সব ফাঁস করে দেয়, তখনই এই নৃশংস কৃষক হত্যার কথা বিশ্ব জানতে পেরেছিল স্তালিনের দ্বিতীয় স্ত্রী নাজেদদা এই গণহত্যার মানসিক চাপ সহ্য করতে না-পেরে শেষপর্যন্ত আত্মহত্যা করেছিল

মৃত্যুদণ্ড : শাসনের ছলনায় রাষ্ট্র কর্তৃক নরমেধ যজ্ঞ (প্রথম পর্ব)



মৃত্যুদণ্ড বা প্রাণদণ্ড (Capital Punishment) হল আইনি পদ্ধতিতে কোনো ব্যক্তিকে শাস্তিস্বরূপ হত্যা করা। যেসব অপরাধের শাস্তি হিসাবে সাধারণত মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়ে থাকে, সেগুলিকে বলা হয় মৃত্যুদণ্ডার্হ অপরাধ। অতীতে প্রায় সকল দেশেই মৃত্যুদণ্ড প্রথা প্রচলিত ছিল। বর্তমানে মাত্র ৫৮টি দেশ প্রত্যক্ষভাবে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে থাকে। ৯৫টি দেশ এই প্রথা অবলুপ্ত করে দিচ্ছে। অবশিষ্ট দেশগুলি দশ বছর এই দণ্ড ব্যবহার করছে না বা যুদ্ধ ইত্যাদি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ করছে না। অনেক দেশেই মৃত্যুদণ্ড একটি বিতর্কের বিষয়। তবে একই রাজনৈতিক আদর্শ ও সাংস্কৃতিক অঞ্চলে মৃত্যুদণ্ড নিয়ে মতান্তর রয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মৌলিক অধিকার সনদের ২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত দেশগুলির উপর মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

আজ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল অধিকাংশ দেশকেই "অ্যাবোলিশনিস্ট" অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ড বিলোপের পক্ষপাতী মনে করে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশানাল মৃত্যুদণ্ড বিলোপের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রসংঘে একটি অ-বাধ্যতামূলক প্রস্তাবনায় ভোটের অনুমোদন দিয়েছে। যদিও বিশ্বের ৬০% মানুষ সেই সব দেশে বাস করেন, যেখানে মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যাবিশিষ্ট চারটি দেশও (গণচিন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইন্দোনেশিয়া)। চারটি দেশই ২০০৮ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় "রেজোলিউশন অন আ মোরোটোরিয়াম অন দি ইউজ অফ দ্য ডেথ পেনাল্টি"-এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। আসলে রাষ্ট্র তখনই সেই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেবে, যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের পক্ষে ঝুঁকিকর হতে পারে  রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সেই মৃত্যুদণ্ডই কাঙ্ক্ষিত, যদি কোনো ব্যক্তি বিদ্রোহী হয়এই বিদ্রোহীদেরই রাষ্ট্রদ্রোহী হিসাবেই প্রতিপন্ন করা হয় এবং মৃত্যুদণ্ডপূর্বক হত্যা করা হয়

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

নো থ্যাংকস

এখন আর সহবাস করি না।  আমার ২৮ বছরের সহবাস জীবনকে পরিত্যাগ করে ফেলেছি গত পাঁচ বছর হয়ে গেল এখন অহংকার হয়, আমিও পারি আমি অনেককিছুই পারি না, কিন্তু জীবনসঙ্গী ছাড়তে পেরেছি  -- যা অনেকেই পারে না !

চেষ্টা করিনি শুধুমাত্র ইচ্ছা শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলাম নিউ ব্যারাকপুর থেকে মধ্যমগ্রাম এই মিনিট ট্রেন জার্নিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম – “আর নয় এর সঙ্গে সহবাস না-করলে খারাপ কিছু হয় কি না জানি না, ভালো  যে কিছু  হয় না সেটা জানি তৎক্ষণাৎ পকেটে মজুত থাকা সহবাসের অনুসঙ্গ নোয়াই খালে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলাম বুকটা ছ্যাঁক করে উঠেছিল, কিছু সময়ের জন্য পরদিন গৌণ-অগৌণ সবাইকে বলে বেরালাম আমি সুদীর্ঘ জীবনের সহবাস-সঙ্গীকে ছেড়ে দিয়েছি আমার সব সোসাইটিতে প্রচার করে দিলাম ব্যস, শুরুতেই যুদ্ধজয় হয়ে গেল কোনো অঙ্গীকার ছাড়াই, কোনো প্রতিজ্ঞা ছাড়াই আমার সহবাসহীন জীবন শুরু হয়ে গেলপারব ? “পল্লব, তুমি পারবেই” – একথা কেউ বলেনি। খুব ভয় করছিল। চুমু ছেড়ে ভাজা মৌরি খেতে শুরু করলাম। আমার শ্বে.........রী এখন আর আমার নয়

সহবাসহীন জীবন কাটাতে কোনো বেগ পাইনি তথাগত জানত না দু-চারটে কথা বলার পর সিগারেট বাড়িয়ে দেয় আমার দিকে বলে – “টান, আমেরিকার এক নম্বর ব্র্যান্ড -- নো থ্যাংকস